মোঃ মোশারফ হোসেন কাউনিয়া রংপুর প্রতিনিধিঃ-
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অফিস সময় হলেও কর্তৃপক্ষ তা মানেন না। মাসের অধিকাংশ কর্মদিবসে হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকলেও কালেভাদ্রে আসলেও অফিসে আসেন দেরিতে এটা যেনো তার রুটিন ওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এতে ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে সকলের সাথে বাড়ছে সমন্বয়হীনতা। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ কাউনিয়ায় যোগদানের পর থেকে সরকারি জেনারেটর, আইপিএস বিকল হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে দেখা দেয় ভূতুড়ে পরিবেশ। তখন ডাক্তারা রোগী দেখেন মোমবাতি জ্বালিয়ে। সম্প্রতি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কাউনিয়া উপজেলা গিয়ে দেখা যায়, বহিঃ বিভাগে রোগীদের ভীড় একজন ডাক্তারের রুমে ৪/৫ জন রোগী দাড়িয়ে আছে তাদের সাথে ব্রিফকেস হাতে তিনজন ঔষধ কোম্পানির লোকজন ডাক্তারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ভিজিটিং কার্ড দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে শুরু হয় এক ভূতুড়ে পরিবেশ। দিনের বেলা দেখা দেয় রাতের অন্ধকার।
বিদ্যুৎ না থাকায় জরুরী বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিতে পাচ্ছে না চিকিৎসকরা। অপর দিকে জেনারেটর, আইপিএস অকেজো থাকায় অপারেশন থিয়েটারে কাজ করতে পারে না ডাক্তার। এছাড়া হাসপাতালে সরকারি কোয়াটার গুলোতে চলছে আরেক অনিয়ম। এখান থেকে সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব হারালেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ এর নিজস্ব পকেট সেটা হাত ছাড়া করছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউনিয়া হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক বলেন, বর্তমান ইউএইচও যোগদান করার পর থেকে চিকিৎসকদের কোন বিষয় শেয়ার না করা কর্মস্থলে অনিয়মিত থাকায় এরই মধ্যে ভালো মানের প্রায় ছয়জন ডাক্তার স্বেচ্ছায় বদলী নিয়ে চলে গেছে। তারা বলেন, এর আগে যারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বায়িত্বে ছিলেন, তারা হাসপাতাল এবং রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন এবং সহকর্মীদের সাথে পরামর্শ করে বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটরের তেলের ব্যবস্থা করে রোগীদের সেবা দিতেন।
আর বর্তমান ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ একাই সব সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে হাসপাতালের বেহাল দশা দেখা দিচ্ছে। তবে এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২/১ মাসের মধ্যে কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেকটা চিকিৎসক শূন্য হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা কর্মস্থলে থাকার কথা থাকলেও তিনি কোন দিনেও কর্মস্থলে রাত্রি যাপন করেন না। গত ঈদের পর থেকে মে মাস পর্যন্ত ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ অফিস করেছেন মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিন। সার্বিক বিষয়ে মতামত নেয়ার জন্য কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ এর সরকারি মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তারিখঃ ০১-০৬-২৪
মোবাইলঃ ০১৭২৫৬৭১৯০২