রাজনীতি দল বনাম নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা।
অথই নূরুল আমি
বিকাশ দাশগুপ্ত বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আমাদের দেশে বিশেষ করে স্বাধীনতার পূর্বে রাজনীতি নিয়ে রাজনীতি দল নিয়ে তেমন কিছু আলোচনা সমালোচনা ছিল না। তবে রাজনীতি দল ছিল। রাজনীতি ও ছিল।
তবে সেই রাজনীতিটা তৃণমূলে পৌঁছে গেল। বঙ্গবন্ধুর 7 মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে সারা বাংলার মানুষের ভিতরে রাজনীতির বাতাস প্রবাহিত হয়। তারপর যুদ্ধ। তারপর স্বাধীন। তারপর বাংলাদেশ।
তারপর আওয়ামী লীগ বনাম বাম দল গুলোর নেতাকর্মীদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শহরে গজ্ঞে হাট বাজারে তর্কাতর্কি এমনকি বিতর্ক হতো। তবে খুবই সামান্য।
1975 এর পনেরো আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তার সপরিবারে হত্যার পর থেকেই এই রাজনীতি নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই বেশি শুরু হলো। মেজর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি ) গঠন এবং প্রতিটি গ্রামে একজন করে গ্রাম সরকার গঠিত করার মধ্য দিয়ে সারাদেশে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিলো।
তখন থেকেই রাজনীতি পৌঁছে গেল। দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে। আর তখন থেকেই দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল মানুষ রাজনীতি করতে আগ্রহী হয়ে উঠলো চরম ভাবে। সবার মনে একটাই চিন্তা। রাজনীতি করলেই সহজে ধনী হওয়া যায় যেমন। তেমনি পাওয়া যায় ক্ষমতা। তেমনি থাকে একটা নিজেস্ব শক্তি। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করতে পারলে প্রশাসন থাকে হাতে এরকম বিভিন্ন বিষয়।
তারপর ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে হাত বদল হতে থাকে দেশের মানুষেরা রাজনীতির প্রতি ঝুঁকতে থাকে।
এদিকে নব্বইয়ের দশকে এসে আমাদের দেশে আরো কয়েকটি নতুন রাজনীতি দল গঠিত হয়। সেই নতুন রাজনৈতিক দল গুলোর ছিল চটকদার বিজ্ঞাপন। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের কথা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা ইত্যাদি ইত্যাদি।
এদিকে 1996 সালে আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে ক্ষমতায় আসে। এবং দির্ঘ পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর 2001 সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির চরম ব্যর্থতায় বিপুল আসনে তারা পরাজিত হয়। তারপর ক্ষমতায় আসে বিএনপি।
সেই সময়ে আওয়ামী লীগের একমাত্র ব্যর্থতা ছিল। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মাত্র তিন শতাংশ নেতাকর্মী দলীয় সুবিধা পেয়েছিল। তাই 2001 নির্বাচনে অনেকেই দলের প্রতি কাজ করেনি। অনেক দেরিতে হলেও আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছিল।
এই যে দলীয় সুবিধা এটা না পেলে কোনো দলেই কোনো নেতাকর্মী থাকে না। তার বড়ো উদাহরণ হচ্ছে ড.কামাল হোসেনের দল। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল। এরশাদের দল। বি চৌধুরীর দল। বতর্মানে বাম দল। এরকম দল গুলোর সাথে কিন্তু কোনো নেতাকর্মী নেই।
দেশের মানুষেরা মনে করে রাজনীতি দল মানেই টাকা পাওয়া যাবে। তাই যখন যে জায়গায় নতুন দল হয়েছে প্রথম প্রথম সেই দলের অফিস গুলো রমরমা থাকে। যখনই শুনে এখানে আরো উল্টা চাদা দিতে হবে। তখনই বিধি বাম। দলের প্রতিষ্ঠারা হারিকেন খোঁজেও আর নেতাকর্মীদেরকে পায়না। এই হলো আমাদের অবস্থা।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।