রংপুরের পীরগাছায় ছাওলা ইউনিয়নে অসহায় পরিবারের মাঝে এলিট স্টীল কর্তৃক শীত বস্ত্র বিতরণ-
মোঃহাবিবুর রহমান হাবিব,পীরগাছা(রংপুর)প্রতিনিধিঃ
কনকনে শীত পাশা-পাশি ঘন কুয়াশায় অসহায় দারিদ্র মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। এ সব হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এলিট স্টীল।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের কিসামত ছাওলা এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক অসহায়, দুস্থ মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেন এলিট স্টীল।
পাওটানা হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, দিপু হাসানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী এম.আমজাদ হোসেন, এলিট স্টীল এর ব্র্যান্ড ম্যানেজার আলিফ ইমতিয়াজ, ছাওলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক প্রমূখ।
কিসামত ছাওলা গ্রামের লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন অশীতিপর খায়রুন বেগম। গায়ে শাড়ির সঙ্গে একটি ফিনফিনে চাদর। এলিট স্টীল এর পক্ষ থেকে একটি কম্বল হাতে তুলে দিতেই তাঁর আর খুশি ধরে না তিনি বললেন, ‘মোক কম্বল দেওয়ার কাও নাই। জারের রাইতত কষ্ট পাছিনু। তোমরা কম্বলখান দিয়া খুব উপকার করিলেন। অ্যালা শান্তিত ঘুমাবা পারিমো।’
কম্বল পেয়ে খুশি আরেক অশীতিপর রাজ্জাক (৮০) বলেন, ‘হামার ঘরের বাঁশের টাটির (বেড়া) ফুটা দিয়ে বাতাস ঢোকে। বিছানাত শুতি থাকিয়াও শান্তি পাও না। এ বছর খুব জাড় পড়িছে। খুব কাহিল হয়া পড়ছি।
কম্বল পেয়ে খুশি মমেনা বেগম বয়স তাঁর ৬৫ বছরের কাছাকাছি। নাতিকে সঙ্গে নিয়ে কম্বল নিতে এসেছিলেন তিনি। কম্বল হাতে পেয়ে মমেনা বেগম বলেন, শীত তো খুবই কষ্ট যাছে। একখান কম্বলের তানে কতঠে গেনু কাহ দিলনি। আল্লাহ তোমারলার ভালো করিবে।’এ সময় কম্বল পেয়ে মমেনা বেগমের মতো অসহায় প্রবীণেরা স্বস্তি প্রকাশ করেন।কম্বল পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় শীতার্ত মানুষের মুখে।
শীত বস্ত্র বিতরণ কালে প্রকৌশলী এম.আমজাদ হোসেন বলেন,সমাজের প্রতিটি মানুষের উচিত অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা।একজন শীতার্ত মানুষের গায়ে একটি কম্বল দিতে পারা অনেক আনন্দের বিষয়। আমাদের প্রত্যেক কে স্ব স্ব অবস্থান থেকে জনসেবায় নিজেকে আত্মনিবেদন করতে হবে। জনসেবায় আত্মনিবেদন করা পরম এবাদত।
শীত বস্ত্র বিতরণ কালে অসহায় মানুষের উদ্দেশে এলিট স্টীল এর ব্র্যান্ড ম্যানেজার আলিফ ইমতিয়াজ বলেন, তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ঠান্ডা কনকনে বাতাস সব মিলিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম কষ্টে দিন যাপন করছে। সামর্থ্য অনুযায়ী এসব হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের পাশে মাঝে এলিট স্টীল এর পক্ষ থেকে শীতে যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য এই উদ্যোগ।
পাওটানা হাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, দিপু হাসান বলেন, আমাদের আশ পাশে ও এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। সড়কের পাশে, বাস ও ট্রেন স্টেশনে, বাজার-ঘাটে রাতের বেলা এমন অনেক অসহায় মানুষ কে পড়ে থাকতে দেখা যায়। আমরা যখন লেপ-কম্বল গায়ে জড়িয়ে দীর্ঘ রাত সুখ নিদ্রায় বিভোর তখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুম অবস্থায় শীতের প্রকোপে যবুথবু হয়ে। যার পেটে ভাত নেই তার গায়ে গরম কাপড় জুটবে কোথা থেকে! আমরা কি পারি না তাদের সাহায্যে একটু এগিয়ে আসতে? সমাজের অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। অসহায়দের সাহায্যে এগিয়ে আসার মাধ্যমেই রচিত হবে মানবিক সেতুবন্ধন। আমাদের সামান্য সহযোগিতা তাদের জীবনে এনে দিতে পারে এক টুকরো সুখ। কনকনে শীতে ঠকঠক করে কাঁপা মানুষের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে তার মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। এর মাধ্যমে প্রকাশ পায় মানুষের প্রতি আমাদের মমত্ব ও ভালোবাসার। আমরা চাইলেই এ সকল দুঃখী মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারি।তিনি এলিট স্টীল কর্তৃক দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম কে সাধুবাদ জানান এবং সেই সাথে সাথে এলিট স্টীল সংস্থার উত্তরোত্তর সাফলতা কামনা করেন।