মাটি মামুন রংপুরঃ-
সন্তান পড়ছে দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিন্তু তাকে প্রয়োজনীয় টাকা পাঠাতে পারছেন না। ঘরে সোমত্ব মেয়ে থাকলেও অনেকেই পারছেন না তাদের বিয়ে দিতে। ওষুধ কিনতে না পারায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর মুখে অনেকেই। এ গল্প রংপুরের শ্যামপুর সুগার মিলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের। গ্রাচুইটি ছুটি ও পিএফ ফান্ডের টাকা না পাওয়ায় অনিশ্চিত জীবন যাপন করছেন তারা।
অবসরপ্রাপ্ত ব্রয়লার ফায়ারম্যান কফিলুদ্দিন এখন দিশেহারা। ৪ মেয়েকে বিয়ে দিয়েও অর্থের অভাবে বিদায় দিতে পারেননি। ইক্ষু উন্নয়ন সহকারী আতাবুজ্জামান দুলু ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী। বন্দোবস্ত করতে পারছেন না ওষুধের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তায় তিনি। রংপুরের শ্যামপুর সুগার মিলের কাজ করা এসব মানুষের বক্তব্যেই ফুটে উঠেছে তাদের জীবন যাপনের করুণ পরিস্থিতি। ভুক্তভোগী কফিল উদ্দিন, আব্দুল হাকিম এবং আফতাবুজ্জামান দুলু বলেন, আমার মেয়ের বিয়ে দিতে পারছি না টাকার অভাবে। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ দিতে পারছি না। প্রতিদিন ওষুধ কেনার জন্য টাকা দরকার হয়, টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারছি না।
দোকানের বাকি পরিশোধ করতে না পারায় ওই পথে চলাফেরা ছেড়েছেন কবিরুদ্দিন। অবসরপ্রাপ্ত সেন্টার ইনচার্জ আমিরুল মারা গেছেন। তার স্ত্রী হার্টের রোগী, আয় রোজগার নেই। ড্রাইভার মমদেল সংসার চালান অন্যের জমিতে মজুরি দিয়ে। এমন অসংখ্য গল্প শ্যামপুর চিনিকল ক্যাম্পাসে। মানববন্ধনে অংশ নেয়া শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের ন্যায্য পাওনা যেন বুঝিয়ে দেয় সরকার। তারা বলছেন, আমরা তো ভিক্ষা চাচ্ছি না। আমরা আমাদের পাওনা টাকা চাইছি।
এদিকে, চিনিকল কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে শ্যামপুর সুগার মিল লিমিটেডের ইনচার্জ প্রকৌশলী অনিশ চন্দ্র বর্মন বলেন, আমরা প্রথমে লাভ করবো তারপর আমাদের টাকা আমরাই নেবো এটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু,, এখন যেহেতু সেটা আমরা করতে পারছি না সেজন্যই আমরা সরকারের দিকে তাকিয়ে আছি।
মিল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্রাচুইটি ছুটি ও অন্যান্য বাবদ ১৪ কোটি এবং পিএফ ফান্ডের ৭ কোটি ৬১ লাখ ২৮ টাকা পাওনা আছে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের।