মাটি মামুন রংপুর প্রতিনিধিঃ-
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলাকে আলোকিত ও অপরাধমুক্ত করতে ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে দৃষ্টি নন্দন সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন শুরু করেছেন উপজেলা প্রশাসন। রংপুর পাবর্তীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ের চেংমারী থেকে হাসিনা নগর পর্যন্ত মূল সড়কে ১৩৭ টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করায় উপজেলার পার্বতীপুর সড়কের বদরগঞ্জের অংশের রাতের বেলাতেও আর অন্ধকারে থাকছে না। একারণে দিনের আলোর মতো নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে ওই দৃষ্টি নন্দন সড়ক দিয়ে চলাচল করছে ছোট বড় যান বাহনসহ বিভিন্ন এলাকার পথচারী। এতে খুশি ও আনন্দিত ওই এলাকার মানুষ।
সরেজমিনে গেলে ব্যবসায়ী মোকছেদুল হকসহ ওই এলাকার লোকজন জানান, রাতে বাস্তায় আলো পেয়ে আমরা খুব খুশি ও আনন্দিত। আগে সন্ধ্যা নামার পরেই ওই সড়কে চুরি চিনতাই হতো। অপরাধীদের অবাধ বিচরণের কারণে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে আমরা ভয় পেতাম । রাত একটু গভীর হলেই ছিনতাইকারীরা সড়কে পথচারী ও যান বাহন আটক করে সর্বস্ব লুটে নিত। একারণে রাতের বেলা ওই সড়ক দিয়ে রিকসা-ভ্যান-অটো চালকসহ পথচারী কেউই যেতে চাইতো না। এখন রাতের বেলা আলো থাকায় সেই ভয় আর নেই। আমরা দৃষ্টি নন্দন সড়ক দিয়ে নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে রাতের বেলা চলাচল করছি। তবে উপজেলার সকল সড়কগলোতে সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করলে অপরাধ প্রবণতা কমার পাশাপাশি মানুষের চলাচল করতে আরও সুবিধা হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান ভুট্টু মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নের প্রধান এই সড়ক দিয়ে বদরগঞ্জ উপজেলাকে প্রথম আলোকিত করার উদ্যোগ নেয়ায় আমি উপজেলা প্রশাসন সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানাই। বদরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, একটি উপজেলা রাতের বেলা আলোকিত থাকলে সড়ক দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি অপরাপ প্রবণতাও কমে আসবে। এতো সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করায় তিনি সরকার প্রধান ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট জানান, আমরা উপজেলা এগিয়ে নিতে নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। উপজেলাকে অন্ধকার থেকে আলোকিত করা তার মধ্যে একটি। রাতে উপজেলার ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লার সড়কগুলো আলোকিত থাকলে সেখানে মাদকসেবী, চোর, ছিনতাইকারী একমনকি কৃষকের গরু চুরিও আর হবে না। এলাকার সর্বস্তরের জনগণ নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে দৃষ্টি নন্দন এই সড়ক দিয়ে রাতের বেলা চলাচল করতে পারবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাইদ জানান, বদরগঞ্জ উপজেলার সকল ইউনিয়নের সড়কগুলোতে আলোর ব্যবস্থা করতে আমরা জাতীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক সাহেবের নেতৃত্বে মেয়র, উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করেছি। এছাড়াও ইউনিয়নগুলোর আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়েও সকলের দাবি ছিল উপজেলাকে অপরাধমুক্ত করে আলোকিত করার। সেই আলোকেই গত ২৯ মে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চেংমারী থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩৭টি দৃষ্টি নন্দন সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন শুরু করা হয়।
তিনি বলেন, দৃষ্টি নন্দন লাইটগুলো অত্যাধুনিক। সূর্য অস্ত যাওয়ার পরপরেই লাইটগুলো অটোমেটিক জ্বলে উঠবে আবার সূর্য উঠার সাথে সাথেই লাইটগুলো নিভে যাবে। সোলার স্ট্রিট লাইট হওয়ায় রাতে সব সময় আলোর রষ্নি ছড়ায়। তিনি আরও বলেন, একটি এলাকা আলোকিত থাকলে সেই এলাকায় সহজে কোন চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি সংঘটিত হয় না এবং সেই এলাকা থেকে অপরাধ প্রবণতাও আর থাকে না। আমরা সরকারের মাধ্যমে উন্নয়নের অংশীদারদের সহযোগীতায় আগামীতে উপজেলার প্রতিটি সড়কে দৃষ্টি নন্দন সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করার পাশাপাশি আলোকিত ও অপরাধমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।