মাটি মামুন রংপুর:-
রংপুরের মডার্ন মোড় থেকে মিঠাপুকুর উপজেলার প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশকে ব্যবহার করা হচ্ছে ধান ও খড় শুকানোর কাজে। এতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে সড়কটি তাতে ব্যস্ত এই সড়কে যানবাহন চালাতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে চালকদের। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও স্থানীয়রা। রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক সারা দেশেরই অন্যতম ব্যস্ত একটি সড়ক।রংপুর বিভাগের আটটি জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ এই মহাসড়কের ওপর নির্ভরশীল। স্থানীয়রা বলছেন, বোরো ধানের মৌসুম এলেই এই সড়কটিকে ধান ও খড় শুকানোর কাজে ব্যবহার করে থাকেন কৃষকরা।
চলতি বোরো মৌসুমেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র।তাতে মহাসড়ক সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় দ্রুতগতির যানবাহনগুলোকে বেগ পেতে হচ্ছে এখান দিয়ে চলতে। মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট বাসস্ট্যান্ডে ট্রাকচালক নাজমুল এই প্রতিবেদক কে বলেন, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ধান ও খড় শুকানোর কারণে নির্দিষ্ট গতিতে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে ধানের ভেজা খড়ের ওপর দিয়ে ট্রাক চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্ঘটনায় মানুষ মরলে চালককে সবাই দোষ দেন। কিন্তু সড়কের ওপর যে অবৈধভাবে ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে,সেটা কেউ দেখছেন না। এই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বাসচালক আতাউর রহমান বলেন,ধান আর খড় দিয়ে অর্ধেক রাস্তা দখল করে রেখেছে। ধান ও খড় শুকানো কাজে ব্যস্ত কৃষকরা গাড়ির হর্ন দিলেও শোনেন না, নিষেধ করলেও মানেন না বরং উল্টাপাল্টা কথা বলেন। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মোটরসাইকেলচালক শরিফুল ইসলাম বলেন,বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় বড় বাস-ট্রাকগুলো গা ঘেঁষে চলে যায়।এর কারণ হচ্ছে ধান ও খড় শুকানোর জন্য রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়া।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ২৬ মে সরেজমিনে দেখা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর থেকে জায়গীর পর্যন্ত মহাসড়কের ওপর ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত নারী-পুরুষরা। তাদের গা ঘেঁষে চলছে দূরপাল্লার যান। সেখানে কাজ করছিলেন স্বপ্না বেগম তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘হামরা কামত আলচি ধান ও পোয়াল হামার না এলা দ্যেওয়ার যে অবস্থা, কখন পানি হয় তার ঠিক নাই। সেই কারণে সড়কোত তাড়াতাড়ি ধান নাড়ি দেইচি টপাস করি শুকাইবে।
ওই সড়কে খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত নূর হোসেন বলেন, প্রত্যেক বার আমার ধানের খড় পচি যায়। পাকা সড়কোত ধান ও খড় তাড়াতাড়ি শুকায়। এ্যটে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও হামরা সাবধানে থাকি। এবিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে ধান ও খড় শুকানো ঠিক নয়। কৃষকদের সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপারে সচেতন করার পাশাপাশি ধান ও খড় শুকানোর কাজ বন্ধ করার জন্য বারবার বলা হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে কেউ যেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে,সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।