নিজস্ব প্রতিবেদঃ-
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মহিষের গাড়ি। এক সময় গরু বা মহিষের গাড়িতে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এমনকি গ্রাম্য অনুষ্ঠানে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষেরা যাতায়াত করতেন। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার করতেন এই মহিষের গাড়ি। ৮০-৯০ দশকে গরু বা মহিষের গাড়ির প্রচলন থাকলেও বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞান আর তথ্য প্রযুক্তির ছোয়ায় মানুষ এখন মহিষের গাড়ি রেখে ট্রেন বাস আর ট্রাকের সাথে উন্নততর জীবন পরিচালনা করছেন। যেখানে মহিষের গাড়িতে একস্থান হতে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে কয়েকদিন লাগত সেখানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের ভ্রমণ কয়েক ঘন্টা লাগছে।আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র ব্যবহারে তেমন আর দেখা যায় না মহিষের গাড়ি।
হারিয়ে যাওয়া মহিষের গাড়ি হঠাৎই চোখে পড়ে ১৬ মে ২০২৩ মঙ্গলবার দুপুরে। রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মহিপুর তিস্তা সেতুর উপরে। কথা হয় মহিষের গাড়ী চালক গাড়িয়াল আবু সাব এর সাথে। মহিষের গাড়ী চালক গাড়িয়াল আবু সাব রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মহিপুর লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ৪০ সাল গ্রামের মৃত্যু -আবু সালেক এর পুত্র। তিনি জানান দুঃখ-দুর্দশার কথা বলেন, ছোটবেলা থেকে বাপজানের সাথে এই মহিষের গাড়ি চালাতে মহিষগুলোকে আপন করে নিয়েছি। বর্তমানে তেমন আয়-রোজগার না থাকলেও গভীর মায়া আর শখের বশেই এই কাজ করে আসছি।
তিনি আরো জানান, সময় বেশি লাগায় মহিষের গাড়ি রেখে মানুষ এখন নছিমন, করিমন, অটোরিকসা ব্যবহার করছেন। রোজগারের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, চর ৪০ সাল থেকে মহিপুর তিস্তা সেতুর উপর যেকোনো পণ্য নিয়ে আসা ৫০০শত টাকা প্রতি টিপ। কাজ পেলে দিনে সব খরচ বাদে ১ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। কিন্তু তেমন কাজ আর পাওয়া যায় না।
ফলে এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য কাজ করেছেন অনেকেই। তাছাড়া বর্তমানে মহিষের খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সাধ্য অনুযায়ী অর্থের জোগানে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন মহিষের জন্য এক হাজার থেকে বারো শতটাকার ঘাস,খর,ফিড কিনতে হয়। আর এক জোড়া মহিষের মূল্য এখন কার বাজারে ৫থেকে ৬ লক্ষ টাকা। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আর সহজলভ্যতায় হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সভ্যতা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু পাঠ্যবইয়ে এসব পড়ে জানতে পারবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চেয়ারম্যান মো:মেহেদী হাসান
সম্পাদক ও প্রকাশক: মনজুর আলম সরকার
Design and Development by www.itcaresbd.com